পেনসিলঃ ড্রয়িং করার প্রাথমিক অপরিহার্য উপকরণ পেনসিল। ড্রয়িং করার জন্য পেনসিলসমূহকে সীসের উপর ভিত্তি করে দুই ভাগে ভাগ করা যায় যেমন- নরম পেনসিল ও শক্ত পেনসিল। নরম পেনসিলসমূহকে B ও শক্ত পেনসিলসমূহকে H দিয়ে প্রকাশ করা হয়। সাধারণ কাজের জন্য মধ্যম মানের পেনসিল (HB ) ব্যবহার করা হয়। গাঢ় রেখা টানার জন্য B এবং সরু বা হালকা রেখা টানার জন্য H পেনসিল ব্যবহার করা হয়।
ড্রয়িং করার সময় পরিচ্ছন্ন রাখার জন্য প্রথমে সরু বা হালকা রেখা টেনে পরে গাঢ় রেখা টানা হলে হাতের বা যন্ত্রপাতির ঘষায় কাগজ কম ময়লা হয়। এছাড়া কাজ করার সমর রুদ্ধ ডাস্টারের সাহায্যে হাত ও যন্ত্রপাতি মুছে নিম্নে কাগজ ও বোর্ড পরিষ্কার থাকবে।
ড্রয়িং বোর্ডঃ ড্রয়িং বোর্ডের উপর কাগজ/ড্রয়িং শিট টেপ (ড্রাফটিং টেপ) এর সাহায্যে আটকানো হয়। এতে প্যারালাল বার আটকানো থাকে, এর সাহায্যে অনুভূমিক রেখা টানা যায়। প্যারালাল বার না থাকলে টি-ক্ষরার এর সাহায্যেও একই কাজ করা যায়। প্যারালাল বার বা টি-স্কয়ারের উপর সেট স্কয়াররেখে খাড়া বা হেলানো রেখাসমূহ টানা হয়। ড্রয়িং বোর্ড অবশ্যই মসৃপ হতে হবে ।
প্যারালাল বার বা টি-স্কয়ারঃ বর্তমানে সর্বত্র প্যারালাল বারের সাহায্যে কাজ করা হলেও কোথাও কোথাও টি ক্ষরারও ব্যবহৃত হয়। এর সাহায্যে অনুভূমিক রেখা টানা হয়। এর উপর সেট ক্ষরার রেখে খাড়া বা হেলানো রেখাসমূহ টানা হয়। প্যারালাল বার বা টি-স্কয়ার সব সময় পরিচ্ছন্ন রাখা উচিত না হলে ড্রয়িং শিট ময়লা হয়ে যাবে।
ড্রয়িং-এ ব্যবহৃত যন্ত্রপাতি ও এর ব্যবহার
সেট ক্ষয়ারঃ এটি এক ধরনের কৌণিক স্কেল বিশেষ। সাধারণ সেট করারের দুটি অংশ থাকে একটি 45°-45°- 90° ও অন্যটি 30°-60°-90° । এর সাহায্যে খাড়া বা হেলানো রেখাসমূহ টানা হয়। এই সেট নিয়ে সর্বনিম্ন 15° কোণ পর্যন্ত কৌণিক রেখা টানা যায়। ড্রয়িং কাজে আর এক ধরনের সেট করার ব্যবহৃত হয় থাকে অ্যাডজাস্টেবল সেট স্কয়ার বলে। এর সাহায্যে খাড়া বা যে কোনো কোপে লাগানো রেখাসমূহ টানা যায়। এটি যে কোনো কোশেই অ্যাডজাস্ট করা যায় ।
কম্পাস/ডিভাইডার: কম্পাস বা ডিভাইডারকে কাটাও বলে। স্কেল থেকে মাপ নেয়ার জন্য, দুটি বিন্দুর দূরত্ব নেয়ার জন্য ইত্যাদি কাজে ব্যবহৃত হয়। ডিভাইডারের বা কাটার পাদুটির জু বা সংযোগ স্থলটি ঢিলা হয়ে গেলে এর সাহায্যে সঠিক মাপ নেয়া সম্ভব হবেনা।
বৃত্ত আঁকার জন্য বা যে কোনো বক্ররেখা আঁকার জন্য পেনসিল কম্পাস ব্যবহার করা হয়। এর একটি পা সূচালো অন্য পারে পেনসিল বা সীম আটকানো থাকে। পা দুটির সংযোগটি স্ক্রু দিয়ে লাগানো থাকে যার সাহায্যে যে কোনো দূরত্বে অ্যাডজাস্ট করা যায় বা ছোটো বড় করে বৃত্ত বা আর্ক (বৃত্তচাপ) অঙ্কন করা যায়।
ইরেজার: নরম রাবার দিয়ে তৈরি বলে ইরেজারকে রাবার বলা হয়। পেনসিলে অতি অপ্রয়োজনীয় বা ভুল অংশ মুছে ফেলার জন্য ইরেজার ব্যবহার করা হয়। তবে এটি কম ব্যবহার করাই ভালো। বেশি ব্যবহারে ড্রয়িং শিট অপরিচ্ছন্ন হয়ে যায় ।
ইরেজিং শিল্ডঃ ড্রয়িং-এর মাঝের কোনো সরু স্থানের বা জটিল কোনো ড্রয়িং-এর চিকন কোনো রেখা বা অক্ষর মুছে ফেলতে ইরেজিং শিশু ব্যবহৃত হয়। এটি ধাতব পাতের সেলুলয়েডের তৈরি হয়।
স্কেল ও ট্রায়েঙ্কার স্কেলঃ স্কেল ও ট্রায়েঙ্কার স্কেল-এর সাহায্যে সাধারণত: ড্রয়িং-এর বিভিন্ন মাপ গ্রহণ করা হয়। ট্রায়েগুলার স্কেল ফুট বা মিটার দুই ধরনের হতে পারে। এতে মোট ৬দিকে ১১টি যাগ স্কেল অঙ্কিত
ট্রায়েঙ্কার স্কেল
ফ্রেঞ্চ কার্ড: অসম বক্ররেখা অঙ্কন করতে বা কম্পানের সাহায্যে যে সকল রেখা অঙ্কন করা যায় না এমন বক্র রেখা অঙ্কন করতে ফ্রেঞ্চ কার্ড ব্যবহার করা হয়।
প্রটেকটর বা চাঁদা: যে কোনো কৌণিক মাপ নেয়ার জন্য প্রটেকটর বা চাঁদা ব্যবহার করা হয়।
ড্রয়িং শিটঃ ড্রয়িং করার জন্য বিভিন্ন প্রকার কাগজ ব্যবহার করা হয় যেমন কার্টিজ পেপার, ট্রেসিং পেপার, বাটার পেপার ইত্যাদি। ড্রয়িং কাগজের মাপ আইএসও (ISO) স্টান্ডার্ড অনুযায়ী Ag থেকে A4 পর্যন্ত হয়ে থাকে।